Dhaka 10:59 pm, Friday, 11 April 2025
সর্বশেষঃ
পূবাইলে দিনে দুপুরে তরুণীর গলায় ছুড়ি ঠেকিয়ে ছিনতাই পূবাইলে হাত-পা বেঁধে ডাকাতি নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট টঙ্গীতে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ, আটক ৩ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে পূবাইলে বিক্ষোভ বি,এম, গিয়াসউদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান পূবাইল সোরল মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে বিএনপি নেতার শুভেচ্ছা বিনিময় পূবাইলের বিল বেলাই রিসোর্টে দুই গ্রামবাসীর ২৬ তম ঈদ পূর্ণমিলনী ও ঈদ আনন্দ অনুষ্ঠিত দেশবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন-শিল্পপতি আইয়ুব আলী ফাহিম নৌকার চেয়ারম্যান-মেম্বার বহাল তবিয়তে—নজরুল ইসলাম খান বিকি  পূবাইলে বিএনপির উদ্যোগে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ

নওগাঁর তাফের আলী সেঞ্চুরি পার করেও মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয় নেই কেন?

স্বাধীন বাংলাদেশ নিউজ ডেক্সঃ-

নওগাঁর তাফের আলী সেঞ্চুরি পার করেও মাথা গোঁজার কোন নিরাপদ আশ্রয় নেই কেন এই উত্তর দেবে কে জানতে চায় জাতির বিবেক! প্রথম স্ত্রীর ঘরে চার সন্তান এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে সাত সন্তানের বাবা শতবর্ষী তাফের আলী। মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয়স্থল নেই তার। যৌবনে যিনি সন্তানদের চাহিদা পূরণ করেছেন, করেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের ব‍্যবস্থা। তারাও আজ তার পাশে নেই। নেই খাবারের কিংবা অসুখের চিকিৎসার নিশ্চয়তা। বর্তমানে ছোট ছেলে আয়নাল হোসেনের পরিবারের সঙ্গে বসবাস করলেও পরিবারের কেউই খবর রাখেন না শতবর্ষী এই বাবার। নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের লক্ষ্মীরামপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা তফের আলী। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ৯৫ বছর। কিন্তু তিনি দাবি করেন তার বয়স ১০৮ থেকে ১১০ বছরের মধ্যে হবে। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট সন্তানের কাছে ভরণপোষণ চাইলে তাকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার ও মারধর এবং হত্যার চেষ্টা করে। এ ছাড়াও বাবার সম্পত্তি ভোগ দখল ও ঘর থেকে টাকা চুরি করে। পরে ভুক্তভোগী বাবা এসব অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আদালতের দ্বারস্ত হয়। এরপর আদালত তাফের আলীর কষ্টের কথা শুনে ছেলে আইনালের বিরুদ্ধে গত ২০ আগস্ট আদলতে মামলা হয় এবং একই তারিখে সমন জারি করে গত ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য করে।সরেজমিনে দেখা গেছে, রোগ শোকে কাতর ৯৫ বছরের মো. তাফের আলী। বর্তমানে জরাজীর্ণ একা ভাঙা বাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। বলতে গেলে অনেকটাই তাফের আলী মানবেতের জীবনযাপন করছেন। বসত ঘরের বর্তমান অবস্থা দেখে এটিকে ঘর না বলে বলা চলে মৃত্যু ফাঁদ। মরিচা ধরে ঝরঝরে হয়ে গেছে গোটা ঘরের চালের টিন। তৈরি হয়েছে হাজারো ফুটো। আর তাতেই সামান্য বৃষ্টিতে ভিজে যায় ঘরের বিছানাপত্রসহ সবকিছু। দীর্ঘদিন মেরামতের অভাবে ঘরের কাঠামোর অবস্থা এতটাই জরাজীর্ণ যে কোনো সময় ঘরটি ভেঙে পড়তে পারে। তাফের আলী জানান, সন্তানরা তাকে দেখেন না। নিজেরা ভালো বাড়িতে থাকেন আর তাকে রেখেছেন ভাঙা জরাজীর্ণ বাড়িতে। ভাত খেতে দেয় না। অনেক কষ্ট করে অন্যের বাড়িতে চেয়ে ভাত খান। এ ছাড়া ওষুধের জন্য অন্যের দ্বারস্থ হতে হয় তাকে। ছেলে আয়নাল ও তার স্ত্রী তাকে খাবার পর্যন্ত দেয় না। এসব সহ্য করতে না পেরে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আবার সেই সন্তানের চাপেই আপস করতে আদালতে গিয়েছেন তিনি। তারপরও সেই সন্তানরা তাকে খেতে পর্যন্ত ডাকেননি। ছেলে আয়নালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক সময় বাজার করে বাসায় নিয়ে গেলে রান্না করতে দেরি হয়। তখন রাগ করে খবার খেতে চায় না। এ ছাড়াও সকালের খবার খেতে বললে বলে, বাজার থেকে খেয়ে আসছি। এসব প্রায়ই ছোট-খাটো বিষয় নিয়ে মামলা মোকদ্দমা করে থাকে এবং এর আগে জেলও খেটেছি। তবে আমাদের ভুল হয়েছে সঠিক সময়ে খবার দেওয়া ও যত্ন নেওয়া উচিত ছিল। আমারও তো দুটো ছেলেমেয়ে আছে। তবে যেটুকু সামর্থ্য রয়েছে চেষ্টা করি বাবাকে ভরণপোষণ দেওয়ার জন্য। এলাকার স্থানীয় প্রতিবেশী মো. খোকা বলেন, তাফের আলীর ৯ জন ছেলে আটজন বাইরে থাকেন বাকি একজন ছেলে মো. আয়নাল তিনি তার বাবার সঙ্গে আলাদা থাকেন। অনেক সময় ছেলে তার বাবাকে খাবার দেয় কখনো দেয় না। তবে মামলা হয়েছে কি না তা জানি না। যেহেতু তার বাবার অনেক বয়স হয়েছে সেক্ষেত্রে ভরণপোষণ দেওয়া উচিত বলে মনে করছি। তাফের আলীর আইনজীবী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এর আগে ছেলের নামে আরেকটি মামলা ছিল। এরপরও গত ১৮ আগস্ট তাফের আলী তার ছেলে আইনাল হোসেনের বিরুদ্ধে সন্তানরা ভাত না দেওয়া ও মারপিটসহ অন্যান্য অভিযোগে এ বছরের ২০ আগস্ট নওগাঁর আমলি আদালতে মামলা করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পূবাইলে দিনে দুপুরে তরুণীর গলায় ছুড়ি ঠেকিয়ে ছিনতাই

নওগাঁর তাফের আলী সেঞ্চুরি পার করেও মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয় নেই কেন?

Update Time : 04:18:55 pm, Wednesday, 23 October 2024

স্বাধীন বাংলাদেশ নিউজ ডেক্সঃ-

নওগাঁর তাফের আলী সেঞ্চুরি পার করেও মাথা গোঁজার কোন নিরাপদ আশ্রয় নেই কেন এই উত্তর দেবে কে জানতে চায় জাতির বিবেক! প্রথম স্ত্রীর ঘরে চার সন্তান এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে সাত সন্তানের বাবা শতবর্ষী তাফের আলী। মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয়স্থল নেই তার। যৌবনে যিনি সন্তানদের চাহিদা পূরণ করেছেন, করেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের ব‍্যবস্থা। তারাও আজ তার পাশে নেই। নেই খাবারের কিংবা অসুখের চিকিৎসার নিশ্চয়তা। বর্তমানে ছোট ছেলে আয়নাল হোসেনের পরিবারের সঙ্গে বসবাস করলেও পরিবারের কেউই খবর রাখেন না শতবর্ষী এই বাবার। নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের লক্ষ্মীরামপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা তফের আলী। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ৯৫ বছর। কিন্তু তিনি দাবি করেন তার বয়স ১০৮ থেকে ১১০ বছরের মধ্যে হবে। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট সন্তানের কাছে ভরণপোষণ চাইলে তাকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার ও মারধর এবং হত্যার চেষ্টা করে। এ ছাড়াও বাবার সম্পত্তি ভোগ দখল ও ঘর থেকে টাকা চুরি করে। পরে ভুক্তভোগী বাবা এসব অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আদালতের দ্বারস্ত হয়। এরপর আদালত তাফের আলীর কষ্টের কথা শুনে ছেলে আইনালের বিরুদ্ধে গত ২০ আগস্ট আদলতে মামলা হয় এবং একই তারিখে সমন জারি করে গত ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য করে।সরেজমিনে দেখা গেছে, রোগ শোকে কাতর ৯৫ বছরের মো. তাফের আলী। বর্তমানে জরাজীর্ণ একা ভাঙা বাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। বলতে গেলে অনেকটাই তাফের আলী মানবেতের জীবনযাপন করছেন। বসত ঘরের বর্তমান অবস্থা দেখে এটিকে ঘর না বলে বলা চলে মৃত্যু ফাঁদ। মরিচা ধরে ঝরঝরে হয়ে গেছে গোটা ঘরের চালের টিন। তৈরি হয়েছে হাজারো ফুটো। আর তাতেই সামান্য বৃষ্টিতে ভিজে যায় ঘরের বিছানাপত্রসহ সবকিছু। দীর্ঘদিন মেরামতের অভাবে ঘরের কাঠামোর অবস্থা এতটাই জরাজীর্ণ যে কোনো সময় ঘরটি ভেঙে পড়তে পারে। তাফের আলী জানান, সন্তানরা তাকে দেখেন না। নিজেরা ভালো বাড়িতে থাকেন আর তাকে রেখেছেন ভাঙা জরাজীর্ণ বাড়িতে। ভাত খেতে দেয় না। অনেক কষ্ট করে অন্যের বাড়িতে চেয়ে ভাত খান। এ ছাড়া ওষুধের জন্য অন্যের দ্বারস্থ হতে হয় তাকে। ছেলে আয়নাল ও তার স্ত্রী তাকে খাবার পর্যন্ত দেয় না। এসব সহ্য করতে না পেরে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আবার সেই সন্তানের চাপেই আপস করতে আদালতে গিয়েছেন তিনি। তারপরও সেই সন্তানরা তাকে খেতে পর্যন্ত ডাকেননি। ছেলে আয়নালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক সময় বাজার করে বাসায় নিয়ে গেলে রান্না করতে দেরি হয়। তখন রাগ করে খবার খেতে চায় না। এ ছাড়াও সকালের খবার খেতে বললে বলে, বাজার থেকে খেয়ে আসছি। এসব প্রায়ই ছোট-খাটো বিষয় নিয়ে মামলা মোকদ্দমা করে থাকে এবং এর আগে জেলও খেটেছি। তবে আমাদের ভুল হয়েছে সঠিক সময়ে খবার দেওয়া ও যত্ন নেওয়া উচিত ছিল। আমারও তো দুটো ছেলেমেয়ে আছে। তবে যেটুকু সামর্থ্য রয়েছে চেষ্টা করি বাবাকে ভরণপোষণ দেওয়ার জন্য। এলাকার স্থানীয় প্রতিবেশী মো. খোকা বলেন, তাফের আলীর ৯ জন ছেলে আটজন বাইরে থাকেন বাকি একজন ছেলে মো. আয়নাল তিনি তার বাবার সঙ্গে আলাদা থাকেন। অনেক সময় ছেলে তার বাবাকে খাবার দেয় কখনো দেয় না। তবে মামলা হয়েছে কি না তা জানি না। যেহেতু তার বাবার অনেক বয়স হয়েছে সেক্ষেত্রে ভরণপোষণ দেওয়া উচিত বলে মনে করছি। তাফের আলীর আইনজীবী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এর আগে ছেলের নামে আরেকটি মামলা ছিল। এরপরও গত ১৮ আগস্ট তাফের আলী তার ছেলে আইনাল হোসেনের বিরুদ্ধে সন্তানরা ভাত না দেওয়া ও মারপিটসহ অন্যান্য অভিযোগে এ বছরের ২০ আগস্ট নওগাঁর আমলি আদালতে মামলা করেন।