Dhaka 11:42 pm, Saturday, 12 April 2025
সর্বশেষঃ
পূবাইলে দিনে দুপুরে তরুণীর গলায় ছুড়ি ঠেকিয়ে ছিনতাই পূবাইলে হাত-পা বেঁধে ডাকাতি নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট টঙ্গীতে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ, আটক ৩ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে পূবাইলে বিক্ষোভ বি,এম, গিয়াসউদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান পূবাইল সোরল মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে বিএনপি নেতার শুভেচ্ছা বিনিময় পূবাইলের বিল বেলাই রিসোর্টে দুই গ্রামবাসীর ২৬ তম ঈদ পূর্ণমিলনী ও ঈদ আনন্দ অনুষ্ঠিত দেশবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন-শিল্পপতি আইয়ুব আলী ফাহিম নৌকার চেয়ারম্যান-মেম্বার বহাল তবিয়তে—নজরুল ইসলাম খান বিকি  পূবাইলে বিএনপির উদ্যোগে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ

পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেলেন মানিক রহমান।

রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ-

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের চন্দ্রখানা গ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ময়নার ছেলে অদম্য মেধাবী মানিক রহমান। মানিক রহমান এবার বিজ্ঞান বিভাগে সৈয়দপুর বিঞ্জান কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পা দিয়ে পরীক্ষার খাতায় লিখে জিপি-এ-৫ গোল্ডেন প্লাস পেয়েছে। তার পরীক্ষার রোল নম্বর ১৪৮৪৬৯। তার পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর হচ্ছে ১৩৩৬। জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। দুই পা থাকলেও একটি লম্বা, অন্যটি খাটো। তারপরও হার মানেননি। চালিয়ে গেছেন লেখাপড়া। তারই ধারাবাহিকতায় পা দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন মানিক রহমান।
গত (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে তার এই সাফল্যের কথা জানা যায়। অদম্য মেধাবী মানিক রহমান এ বছর নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর আগে ২০২২ সালেও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। এসএসসিতেও যেভাবে নিজের ল্যাপটপ পা দিয়ে চালিয়ে পরীক্ষার ফল বের করেছেন। ঠিক একইভাবে পা দিয়ে ল্যাপটপ চালিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা রেজাল্ট দেখেছেন মানিক নিজেই। এবারও পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার পর মানিকের জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর শুনে সবাই খুশি।
বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় নিজের মনোবলকে পুঁজি করে তিনি পিএইসি ও জেএসসি পরীক্ষাতেও সকল বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কম্পিউটার টাইপিং ও ইন্টারনেট ব্যবহারেও পারদর্শী। তাই মানিক রহমান ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চান। মানিক রহমান বলেন, আমার দুটো হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমতে এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমি এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছি। আমি যেন সবার দোয়া ও ভালোবাসায় প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারি এবং ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি। মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে। মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। বড় ছেলে মানিক যে শারিরীক প্রতিবন্ধী এটা আমরা মনে করি না। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকলেও ছোট থেকে আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। সমাজে অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলে-মেয়েদের চেয়েও মানিক পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এটা আমাদের গর্ব। সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন সে যেন সুস্থ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে। সে যেন ভালো কোনো প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে পারে সেই দোয়াই করি।সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও মানিক রহমান আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে যেমন তার বাবা-মার কাছে হীরা মানিক। ঠিক আমাদের কাছেও সে অমূল্য। তার ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিষ্ঠানের সবাই গর্বিত। দোয়া করি তার স্বপ্নগুলো যেন পূরণ হয়।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পূবাইলে দিনে দুপুরে তরুণীর গলায় ছুড়ি ঠেকিয়ে ছিনতাই

পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেলেন মানিক রহমান।

Update Time : 02:22:43 pm, Thursday, 17 October 2024

রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ-

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের চন্দ্রখানা গ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ময়নার ছেলে অদম্য মেধাবী মানিক রহমান। মানিক রহমান এবার বিজ্ঞান বিভাগে সৈয়দপুর বিঞ্জান কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পা দিয়ে পরীক্ষার খাতায় লিখে জিপি-এ-৫ গোল্ডেন প্লাস পেয়েছে। তার পরীক্ষার রোল নম্বর ১৪৮৪৬৯। তার পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর হচ্ছে ১৩৩৬। জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। দুই পা থাকলেও একটি লম্বা, অন্যটি খাটো। তারপরও হার মানেননি। চালিয়ে গেছেন লেখাপড়া। তারই ধারাবাহিকতায় পা দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন মানিক রহমান।
গত (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে তার এই সাফল্যের কথা জানা যায়। অদম্য মেধাবী মানিক রহমান এ বছর নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর আগে ২০২২ সালেও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। এসএসসিতেও যেভাবে নিজের ল্যাপটপ পা দিয়ে চালিয়ে পরীক্ষার ফল বের করেছেন। ঠিক একইভাবে পা দিয়ে ল্যাপটপ চালিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা রেজাল্ট দেখেছেন মানিক নিজেই। এবারও পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার পর মানিকের জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর শুনে সবাই খুশি।
বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় নিজের মনোবলকে পুঁজি করে তিনি পিএইসি ও জেএসসি পরীক্ষাতেও সকল বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কম্পিউটার টাইপিং ও ইন্টারনেট ব্যবহারেও পারদর্শী। তাই মানিক রহমান ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চান। মানিক রহমান বলেন, আমার দুটো হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমতে এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমি এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছি। আমি যেন সবার দোয়া ও ভালোবাসায় প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারি এবং ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি। মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে। মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। বড় ছেলে মানিক যে শারিরীক প্রতিবন্ধী এটা আমরা মনে করি না। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকলেও ছোট থেকে আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। সমাজে অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলে-মেয়েদের চেয়েও মানিক পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এটা আমাদের গর্ব। সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন সে যেন সুস্থ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে। সে যেন ভালো কোনো প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে পারে সেই দোয়াই করি।সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরেও মানিক রহমান আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে যেমন তার বাবা-মার কাছে হীরা মানিক। ঠিক আমাদের কাছেও সে অমূল্য। তার ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিষ্ঠানের সবাই গর্বিত। দোয়া করি তার স্বপ্নগুলো যেন পূরণ হয়।